বাংলাদেশে চাকরির বাজারে যে কয়টি পেশার অসম্ভব চাহিদা রয়েছে তার মধ্যে
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার অন্যতম। চাহিদার তুলনায় এই পেশাতে যোগ্য প্রার্থীর
সংখ্যা বাংলাদেশে অনেকে কম। বাংলাদেশে টেক্সটাইল শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটে
চলেছে। বিশ্বমানের টেক্সটাইল শিল্পের কাতারে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্প
ইতিমধ্যেই নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে এই শিল্পে প্রয়োজন দক্ষ প্রযুক্তিজ্ঞানসমৃদ্ধ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের।
বাংলাদেশে যেখানে চাকরির পদসংখ্যার বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর আধিক্য দেশের বেকার জনগোষ্ঠী বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, তখন এই শিল্পে বিরাজ করছে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশ। ক্রমবর্ধমান টেক্সটাইল শিল্পের দ্রুত বিকাশের কারণে এই শিল্পে চাকরির রয়েছে অবারিত সুযোগ। টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা এতোটাই বেশি যে, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পূর্বেই ছাত্রদের চাকরি হয়ে যায়। বাংলাদেশে খুব কম শিল্পেই চাকরি প্রার্থীর তুলনায় প্রতিষ্ঠানের চাকরির চাহিদা বেশি রয়েছে।
কাজের ক্ষেত্রঃ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি দুটি ক্ষেত্রেই রয়েছে চাকরি বিশাল ক্ষেত্র। সরকারী বিভিন্ন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে স্থাপিত টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের রয়েছে অবারিত সুযোগ। সেই সাথে গার্মেন্টস শিল্পেও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের রয়েছে ব্যপক চাহিদা। দেশী-বিদেশি বিভিন্ন বায়িং অফিসে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে কাজ করে চলেছে। তবে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের মূল জায়গা হিসেবে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন টেক্সটাইল শিল্প প্রতিষ্ঠানকেই বিবেচিত করা হয়। টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে উৎপাদন কার্যক্রমের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করতে হয় তাদের। মূলত একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারকে যেকোন ছোট-বড় টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির পণ্য উৎপাদন কার্যক্রমের প্রাণ হিসেবে বিবেচিত করা হয়।
বিভিন্ন কম্পোজিট শিল্প, স্পিনিং, উইভিং সহ গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করে থাকেন। সেই সাথে বিভিন্ন ব্যাংক এবং শিল্প ঋণ প্রদানকারী সংস্থা সমূহের শিল্পঋণ বিতরণ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ রয়েছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের। শুধুমাত্র দেশের অভ্যন্তরেই তাদের জন্য রয়েছে বিশাল কাজের ক্ষেত্র। চাহিদার তুলনায় দেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অপ্রতুলতার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো শেষ বর্ষে অধ্যায়নরত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি প্রদান করে থাকে। ফলে এই বিষয়ে পড়ালেখা সম্পন্নকারী কোন ব্যক্তিকে বেকার বসে থাকতে হয় না। বরং একজন ছাত্র ছাত্রী শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করার পূর্বেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চাকরিতে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানানোর কারণে তাদের পছন্দমত বেতন এবং সুযোগসুবিধা দিতে সক্ষম প্রতিষ্ঠানকে নিজেই মনোনিত করে। অর্থাৎ বাংলাদেশে অন্যান্য চাকরির ক্ষেত্রে যখন চাকরির পদের বিপরীতে অসংখ্য তরুণ-তরুণী হন্যে হয়ে ছুটে চলেছে তখন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরির আমন্ত্রণের মধ্য হতে নিজের পছন্দমত প্রতিষ্ঠান নিজেই নির্বাচিত করে থাকে।
টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অপ্রতুলতার কারণে শিক্ষা জীবনের শেষ বর্ষে অধ্যায়নরতদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চাকরিতে নিয়োগ দিয়ে থাকলেও এক্ষেত্রে একজন ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষা জীবনে কোন বিরূপ প্রভাব পড়ে না। কেননা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই বিষয়ক যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই তারা এই বিষয়ে সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখে চলে।
বাংলাদেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতে হলে একজন প্রার্থীকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক ডিগ্রী অর্জনকরতে হয়। সেই সাথে এই বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রাপ্তরাও এই শিল্পে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ পেয়ে থাকে। টেক্সটাইল শিল্পে যথেষ্ট চাকরির সুযোগ থাকায় এবং যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীর সংখ্যা কম হবার কারণে এই শিল্পে একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন অনেক বেশি হয়ে থাকে। শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হবার পূর্বেই অর্থাৎ চতুর্থ বর্ষে অধ্যায়নরত অবস্থায় যেহেতু একজন ছাত্র-ছাত্রী তাদের চাকরি জীবন শুরু করে থাকে সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের আকার এবং ব্যবসায়িক কর্মপরিধির উপর ভিত্তি করে তাদের বেতন/ সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় অধ্যায়নরত একজন ছাত্র-ছাত্রী যে কোন প্রতিষ্ঠানেই ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতনে নিজেদেরকে নিয়োজিত করতে সক্ষম হন। প্রতিষ্ঠানে কাজ করার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন এবং শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করার পর পরই এক্ষেত্রে তাদের বেতন কাঠামো ২৫-৩০ হাজার টাকা হয়ে যায়। তবে টেক্সটাইল শিল্পে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি অভিজ্ঞতার যথেষ্ট মূল্যায়ন করা হয়। একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন তাদের কর্মের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ধারিত হবার মাধ্যমে অতিদ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে একজন দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৬০-৭০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। সেই সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে প্রতিষ্ঠানকর্তৃক প্রদেয় অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও। দীর্ঘদিন এই শিল্পে নিজের দক্ষতা, মেধা এবং অভিজ্ঞতার কল্যাণে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কাঠামো বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অসম্ভব ভাল। ১৫-২০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন লক্ষাধকি টাকা হয়ে থাকে। ফলে এই পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয় অতিদ্রুততার সাথে।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে হলে একজন প্রার্থীকে অবশ্যই টেক্সটাইল টেকনোলজিতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। এছাড়াও ডিপ্লোমা ডিগ্রী সম্পন্নকারী ব্যক্তিরাও এই শিল্পে প্রতিষ্ঠা অর্জন করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে তাদের বেতন/সুযোগ সুবিধা স্নাতক ডিগ্রী অর্জনকারীদের তুলনায় অবশ্যই কম হয়। তবে কর্ম দক্ষতায় নিজেকে দক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করণের মাধ্যমে পেশাগত সফলতা সম্ভব।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার তৈরিতে সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে রয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ‘কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি’ এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। সারাদেশে মোট ৪টি সরকারি টেক্সটাইল টেকনোলজি কলেজ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজির ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক ডিগ্রী প্রদান করা হয়ে থাকে। কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি মূলত দুইটি কোর্সে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করে থাকে। বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং স্পেশালাইজেশন ইন ইয়ার্ন/ফেব্রিক্স/ ওয়েট প্রসেসিং/ এ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারিং বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে। অন্য একটি কোর্স হিসেবে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক এবং ডিপ্লোমা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তবে ‘কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি’ হতে পাশকৃত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির বাজারে রয়েছে সর্বাধিক চাহিদা।
প্রশিক্ষণঃ একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার'র টেক্সটাইল টেকনোলজির আধুনিক সকল প্রযুক্তি সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হয়। বিশেষ করে সর্বাধুনিক মেশিন সম্বন্ধে ধারণা অর্জন করতে স্ব- স্ব প্রতিষ্ঠান হতেই দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই।
বাংলাদেশে যখন বেকার সমস্যা দিন দিনই বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে তখন টেক্সটাইল শিল্পে চলছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের সংকট। বিশেষায়িত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে স্বপ্নীল ক্যারিয়ারে আপনার যাত্রা শুভ হউক।
তথ্যা সুত্রঃ http:// www.somewhereinblog.net/blog/ jullvern/29241778
বাংলাদেশে যেখানে চাকরির পদসংখ্যার বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর আধিক্য দেশের বেকার জনগোষ্ঠী বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, তখন এই শিল্পে বিরাজ করছে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশ। ক্রমবর্ধমান টেক্সটাইল শিল্পের দ্রুত বিকাশের কারণে এই শিল্পে চাকরির রয়েছে অবারিত সুযোগ। টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা এতোটাই বেশি যে, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পূর্বেই ছাত্রদের চাকরি হয়ে যায়। বাংলাদেশে খুব কম শিল্পেই চাকরি প্রার্থীর তুলনায় প্রতিষ্ঠানের চাকরির চাহিদা বেশি রয়েছে।
কাজের ক্ষেত্রঃ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি দুটি ক্ষেত্রেই রয়েছে চাকরি বিশাল ক্ষেত্র। সরকারী বিভিন্ন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে স্থাপিত টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের রয়েছে অবারিত সুযোগ। সেই সাথে গার্মেন্টস শিল্পেও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের রয়েছে ব্যপক চাহিদা। দেশী-বিদেশি বিভিন্ন বায়িং অফিসে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে কাজ করে চলেছে। তবে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের মূল জায়গা হিসেবে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন টেক্সটাইল শিল্প প্রতিষ্ঠানকেই বিবেচিত করা হয়। টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে উৎপাদন কার্যক্রমের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করতে হয় তাদের। মূলত একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারকে যেকোন ছোট-বড় টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির পণ্য উৎপাদন কার্যক্রমের প্রাণ হিসেবে বিবেচিত করা হয়।
বিভিন্ন কম্পোজিট শিল্প, স্পিনিং, উইভিং সহ গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করে থাকেন। সেই সাথে বিভিন্ন ব্যাংক এবং শিল্প ঋণ প্রদানকারী সংস্থা সমূহের শিল্পঋণ বিতরণ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ রয়েছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের। শুধুমাত্র দেশের অভ্যন্তরেই তাদের জন্য রয়েছে বিশাল কাজের ক্ষেত্র। চাহিদার তুলনায় দেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অপ্রতুলতার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো শেষ বর্ষে অধ্যায়নরত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি প্রদান করে থাকে। ফলে এই বিষয়ে পড়ালেখা সম্পন্নকারী কোন ব্যক্তিকে বেকার বসে থাকতে হয় না। বরং একজন ছাত্র ছাত্রী শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করার পূর্বেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চাকরিতে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানানোর কারণে তাদের পছন্দমত বেতন এবং সুযোগসুবিধা দিতে সক্ষম প্রতিষ্ঠানকে নিজেই মনোনিত করে। অর্থাৎ বাংলাদেশে অন্যান্য চাকরির ক্ষেত্রে যখন চাকরির পদের বিপরীতে অসংখ্য তরুণ-তরুণী হন্যে হয়ে ছুটে চলেছে তখন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরির আমন্ত্রণের মধ্য হতে নিজের পছন্দমত প্রতিষ্ঠান নিজেই নির্বাচিত করে থাকে।
টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অপ্রতুলতার কারণে শিক্ষা জীবনের শেষ বর্ষে অধ্যায়নরতদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চাকরিতে নিয়োগ দিয়ে থাকলেও এক্ষেত্রে একজন ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষা জীবনে কোন বিরূপ প্রভাব পড়ে না। কেননা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই বিষয়ক যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই তারা এই বিষয়ে সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখে চলে।
বাংলাদেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতে হলে একজন প্রার্থীকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক ডিগ্রী অর্জনকরতে হয়। সেই সাথে এই বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রাপ্তরাও এই শিল্পে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ পেয়ে থাকে। টেক্সটাইল শিল্পে যথেষ্ট চাকরির সুযোগ থাকায় এবং যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীর সংখ্যা কম হবার কারণে এই শিল্পে একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন অনেক বেশি হয়ে থাকে। শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হবার পূর্বেই অর্থাৎ চতুর্থ বর্ষে অধ্যায়নরত অবস্থায় যেহেতু একজন ছাত্র-ছাত্রী তাদের চাকরি জীবন শুরু করে থাকে সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের আকার এবং ব্যবসায়িক কর্মপরিধির উপর ভিত্তি করে তাদের বেতন/ সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় অধ্যায়নরত একজন ছাত্র-ছাত্রী যে কোন প্রতিষ্ঠানেই ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতনে নিজেদেরকে নিয়োজিত করতে সক্ষম হন। প্রতিষ্ঠানে কাজ করার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন এবং শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করার পর পরই এক্ষেত্রে তাদের বেতন কাঠামো ২৫-৩০ হাজার টাকা হয়ে যায়। তবে টেক্সটাইল শিল্পে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি অভিজ্ঞতার যথেষ্ট মূল্যায়ন করা হয়। একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন তাদের কর্মের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ধারিত হবার মাধ্যমে অতিদ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে একজন দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৬০-৭০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। সেই সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে প্রতিষ্ঠানকর্তৃক প্রদেয় অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও। দীর্ঘদিন এই শিল্পে নিজের দক্ষতা, মেধা এবং অভিজ্ঞতার কল্যাণে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কাঠামো বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অসম্ভব ভাল। ১৫-২০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন লক্ষাধকি টাকা হয়ে থাকে। ফলে এই পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয় অতিদ্রুততার সাথে।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে হলে একজন প্রার্থীকে অবশ্যই টেক্সটাইল টেকনোলজিতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। এছাড়াও ডিপ্লোমা ডিগ্রী সম্পন্নকারী ব্যক্তিরাও এই শিল্পে প্রতিষ্ঠা অর্জন করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে তাদের বেতন/সুযোগ সুবিধা স্নাতক ডিগ্রী অর্জনকারীদের তুলনায় অবশ্যই কম হয়। তবে কর্ম দক্ষতায় নিজেকে দক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করণের মাধ্যমে পেশাগত সফলতা সম্ভব।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার তৈরিতে সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে রয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ‘কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি’ এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। সারাদেশে মোট ৪টি সরকারি টেক্সটাইল টেকনোলজি কলেজ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজির ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক ডিগ্রী প্রদান করা হয়ে থাকে। কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি মূলত দুইটি কোর্সে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করে থাকে। বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং স্পেশালাইজেশন ইন ইয়ার্ন/ফেব্রিক্স/ ওয়েট প্রসেসিং/ এ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারিং বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে। অন্য একটি কোর্স হিসেবে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক এবং ডিপ্লোমা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তবে ‘কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি’ হতে পাশকৃত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির বাজারে রয়েছে সর্বাধিক চাহিদা।
প্রশিক্ষণঃ একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার'র টেক্সটাইল টেকনোলজির আধুনিক সকল প্রযুক্তি সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হয়। বিশেষ করে সর্বাধুনিক মেশিন সম্বন্ধে ধারণা অর্জন করতে স্ব- স্ব প্রতিষ্ঠান হতেই দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই।
বাংলাদেশে যখন বেকার সমস্যা দিন দিনই বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে তখন টেক্সটাইল শিল্পে চলছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের সংকট। বিশেষায়িত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে স্বপ্নীল ক্যারিয়ারে আপনার যাত্রা শুভ হউক।
তথ্যা সুত্রঃ http://
0 comments:
Post a Comment
Your comments will be warmly appreciated. Please comment us